- মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যর অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্পদ – বৈষ্ণব পদাবলী।
- এ অমর কবিতাবলী সৃষ্টি হয়- রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলা অবলম্বনে।
- পদাবলী সাহিত্যের আদি বাঙালি কবি কাকে ধরা হয়? >জয়দেব।
- বৈষ্ণব পদাবলী বৈষ্ণব সমাজে পরিচিত মহাজন পদাবলী নামে।
- বৈষ্ণব পদাবলীর মাহকবি বলা হয় বিদ্যাপতি, চণ্ডীদাস, জ্ঞানদাস, গোবিন্দদাস, বলরাম দাস।
- বৈষ্ণব পদাবলির অধিকাংশ পদ রচিত – ব্রজবুলি ভাষায়।
- ব্রজবুলি ভাষা হলো- একটি কৃত্রিম ভাষা।
১. বিষ্ণুর উপাসকদের বৈষ্ণব বলে।
২.অনেকগুলি পদের সমষ্টি কে বলে পদাবলী।
৩. সপ্তম শতাব্দীতে আচার্য দণ্ডী ‘পদসমুচ্চয়’ অর্থে তাঁর কাব্যাদর্শে পদাবলী শব্দটি ব্যবহার করেন।
৪.মহাভারতের শান্তিপর্বে বৈষ্ণব শব্দটির প্রথম উল্লেখ মেলে।
৫.বৈষ্ণব ভক্তকবিরা তাঁদের উপাস্য দেবদেবীর উদ্দেশ্যে ভক্তিমূলক যে পদগুলি রচনা করেছেন সেগুলিকেই একত্রে বৈষ্ণব পদাবলী নামে পরিচিত।
৬.বাংলা বৈষ্ণব পদাবলী বাংলা ও ব্রজবুলি এই দুই ভাষায় লেখা।
৭. ব্রজবুলি মৈথিলী, বাংলা, অবহটঠ এই তিন ভাষার সংমিশ্রনে তৈরি হয়েছে।
৮.ব্রজবুলি ভাষায় লেখা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা কাব্যের নাম ‘ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী’।
৯.ব্রজবুলি ভাষায় প্রথম পদ লেখেন যশোরাজ খাঁ।
১০. পদাবলী সাহিত্যের সূচনা ধরা হয় জয়দেব থেকে।
১১.রূপ গোস্বামীর লেখা বৈষ্ণব রসশাস্ত্রের সর্বাধিক প্রামাণিক গ্রন্থ দুটি হল ‘ভক্তিরসামৃতসিন্ধু’ এবং ‘উজ্জ্বলনীলমণি’।
১২. বিদ্যাপতিকে অভিনব জয়দেব বলা হয় ৷
১৩.গৌরচন্দ্রিকা বিষয়ক প্রথম পদ লেখেন রাধামোহন ঠাকুর।
১৪. ষোড়শ শতককে বৈষ্ণব পদসাহিত্যের সুবর্ন যুগ বলা হয়।
১৫.বিদ্যাপতিকে মৈথিলী কোকিল বলা হয়।
১৬.গৌরচন্দ্রিকা বিষয়ক পদ প্রথম গাওয়া হয় খেতুরীর মহোৎসবে।
১৭.গোবিন্দদাস কবিরাজ অভিসার পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ কবি।
১৮.মাথুর পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ কবি বিদ্যাপতি।
১৯.প্রার্থনা পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ কবি বিদ্যাপতি।
২০. পূর্বরাগের শ্রেষ্ঠ কবি হলেন চণ্ডীদাস।
২১.আক্ষেপানুরাগ পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ কবি চণ্ডীদাস।
২২.রাধার কয়েকজন দূতীর নাম হল বায়বী,শিবদা,পৌরবী।
২৩. রাধার কয়েকজন সখী হল ললিতা, বিশাখা, চম্পকললিতা, ইন্দুলেখা, তুঙ্গবিদ্যা।
২৪.গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মের পথিকৃৎ হলেন মাধবেন্দ্রপুরী।
২৫.রাধার পিতামহের নাম মহীভানু।
২৬.রাধার পিতার নাম বৃষভানু এবং মাতার নাম কীর্তিদা ।
২৭.গোবিন্দদাস কবিরাজকে দ্বিতীয় বিদ্যাপতি বলা হয়।
২৮.জ্ঞানদাসকে চণ্ডীদাসের ভাবশিষ্য বলা হয় ।
২৯. প্রাকচৈতন্য যুগের দুজন পদকর্তা হলেন বিদ্যাপতি, চণ্ডীদাস।
৩০. চৈতন্য উত্তর দুজন পদকর্তা হলেন জ্ঞানদাস, গোবিন্দদাস।
৩১.ষোড়শ শতকের কয়েকজন পদকর্তা হলেন নরহরি সরকার, লোচন দাস, জ্ঞানদাস, বলরাম দাস।
৩২.সপ্তদশ শতকের কয়েকজন পদকর্তা হলেন গোবিন্দদাস, নরোত্তম দাস।
৩৩.সপ্তদশ শতকের কয়েকটি বৈষ্ণব পদসংকলন হল নন্দ কিশোর দাসের রসপুষ্পকলিকা’, পীতাম্বর দাসের ‘রসমঞ্জরী’, মনোহর দাসের ‘দিনমণিচন্দ্রোদয়’।
৩৪.অষ্টাদশ শতকের কয়েকটি বৈষ্ণব কাব্য সংকলন হল। রাধামোহন ঠাকুরের ‘পদামৃতসমুদ্র’, দীনবন্ধু দাসের ‘সঙ্কীর্তনামৃত’, গোকুলানন্দ সেনের’ পদকল্পতরু’।
৩৫.বৈষ্ণবপদে আট রকমের নায়িকা দেখা যায়।যথা অভিসারিকা, বাসকসজ্জা, উৎকণ্ঠিতা, বিপ্রলব্ধা, খণ্ডিতা, কলহান্তরিতা, প্রোষিতভর্তৃকা, স্বাধীনভর্তৃকা।
৩৬. বৈষ্ণব সাহিত্যে আট রকমের অভিসার লক্ষ্য করা যায়, যথা-জ্যোৎস্নাভিসার, তামসাভিসার, বর্ষাভিসার,দিবাভিসার, কুাটিকাভিসার, তীর্থযাত্রাভিসার,উন্মত্তাভিসার,অসমঞ্জভিসার।
৩৭.মধুর রসকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়-সাধারণী, সমঞ্জস্য, সমর্থা ।
৩৮.কবি কর্ণপুর পূর্বরাগের দর্শনজাত অনুরাগ তিন রকম হতে পারে বলে মনে করেন। যথা-সাক্ষাদর্শন, চিত্রপটে দর্শন,স্বপ্নে দর্শন।
৩৯.কবি কর্ণপুর পূর্বরাগের শ্রবণজাত অনুরাগ পাঁচ রকম হতে পারে বলে মনে করেন। যথা-বন্দীমুখে শ্রবণ, দূতী মুখে শ্রবণ, সখী মুখে শ্রবণ, গুণিজন দের মুখে শ্রবণ, বংশীধ্বনি শ্রবণ
৪০. শ্রীচৈতন্যের অন্যতম প্রধান পার্শ্বচর ছিলেন নিত্যানন্দ।
৪১.বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বলেছেন বিদ্যাপতির কবিতা ‘স্বর্ণহার’ এবং চণ্ডীদাসের কবিতা ‘রুদ্রাক্ষমালা’।
৪২.রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিদ্যাপতিকে ‘সুখের কবি’ এবং চণ্ডীদাসকে ‘দুঃখের কবি’ বলেছেন।
৪৩. মহাপ্রভুর লীলার প্রত্যক্ষদ্রষ্টা ছিলেন বাদুদেব ঘোষ ।
৪৪.জ্ঞান দাসের ভণিতায় ৪০০টি পদ পাওয়া গেছে।
৪৫.রূপ গোস্বামী তাঁর ‘উজ্জ্বলনীলমণি’ গ্রন্থে কৃষ্ণ প্রেমিকাদের দুটি শ্রেণিতে ভাগ করেছেন। যথা-স্বকীয়া,পরকীয়া।
৪৬. ড. সুকুমার সেন বৈষ্ণব পদাবলীর চারটি বিভাগ করেছেন, যথা- গৌরাঙ্গ বিষয়ক পদাবলী, ভজন পদাবলী, রাগাত্মিকা পদাবলী, রাধাকৃষ্ণ পদাবলী।
৪৭.গৌড়ীয় বৈষ্ণবগন শ্রীরাধাকে কৃষ্ণের হ্লাদিনী শক্তি’ বলে অভিহিত করেছেন।
৪৮.বৈষ্ণব সাহিত্যে পঞ্চরস হল শান্ত, দাস্য, সখ্য, বাৎসল্য, মধুর।
৪৯.বলরাম দাস হলেন বাৎসল্য রসের শ্রেষ্ঠ বৈষ্ণব পদকর্তা।
৫০. পদাবলীর চণ্ডীদাস ‘চণ্ডীদাস’ ছাড়াও ‘দ্বিজচণ্ডীদাস’ ভণিতায় পদ লিখেছেন।
৫১.বিদ্যাপতি অনেক পদে ‘কবিরঞ্জন’ ভণিতা ব্যবহার করেছেন।
৫২. শ্রীচৈতন্যদেবের জীবনকাল বলুন। >১৪৮৬-১৫৩৩খ্রিঃ।
৫৩. বাংলাদেশে প্রাপ্ত প্রাচীনতম ব্রজবুলী পদকার কে? >যশোরাজ খাঁ।
৫৪. দু’জন চৈতন্য সমসাময়িক পদকারের নাম করুন। >ক মুরারি গুপ্ত। খ. শিবানন্দ সেন ।…
৫৫. গৌরচন্দ্রিকার জনক কে? >নরহরি সরকার ।
৫৬. সপ্তদশ শতকের দু’জন পদকারের নাম করুন। > ক. সৈয়দ মর্তুজা। খ. নসির মামুদ। …
৫৭. ঘোষ ভাতৃত্রয় কারা? >ক. গোবিন্দ ঘোষ খ. মাধব ঘোষ গ. বাসু ঘোষ ।
৫৮. চারজন ব্রজবুলি পদকারের নাম করুন। > ক. বিদ্যাপতি খ. গোবিন্দদাস গ. বলরাম দাস ঘ. জ্ঞানদাস।।..
৫৯. বৈষ্ণব সাহিত্যের অন্তর্গত শাখা গুলির নাম করুন। >ক. চৈতন্যজীবনী সাহিত্য খ. পদাবলী সাহিত্য গ.বৈষ্ণব তত্ত্ব সাহিত্য।
৬০. বৈষ্ণব পদাবলীতে মুখ্য রস কয়টি? >পাঁচটি। শ্রেষ্ঠ কোনটি? >শৃঙ্গার বা মধুর
৬১. কি মোহিনী জান বঁধু কি মোহিনী জান; কার কোন পর্যায়ের পদ? > চণ্ডীদাসের। আক্ষেপানুরাগ পর্যায়ের।
৬২. সংগীত মাধব কার লেখা গ্রন্থ? > গোবিন্দদাসের।
৬৩. দ্বিতীয় বিদ্যাপতি কার আখ্যা? > গোবিন্দদাস। কে দিয়েছেন? > বল্লভ দাস।
৬৪. চণ্ডীদাসের ভাবশিষ্য কে? >জ্ঞানদাস। তিনি কার শিষ্যত্ব নেন? >জাহ্নবা দেবীর।
৬৫. বাৎসল্য রসের শ্রেষ্ঠ পদকর্তা কে? > বলরাম দাস।
৬৬. দুইটি পদাবলী সংকলন গ্রন্থের নাম করুন। >ক্ষণদাগীতচিন্তামণি ও পদকল্পতরু।
৬৭. আদি পদাবলী সংকলন ও শ্রেষ্ঠ পদাবলী সংকলনের নাম করুন।>যথাক্রমে, ক্ষণদাগীতচিন্তামণি ও পদকল্পতরু।
৬৮. যৌবনের বনে মন হারাইয়া গেল;কার পঙক্তি? >জ্ঞানদাসের।
৬৯. নীরদ নয়নে নীর ঘন সিঞ্চনে;কার কোন পর্যায়ের পদ? > গোবিন্দদাসের।গৌরাঙ্গ-বিষয়ক।
৭০. অভিসার;গৌরাঙ্গ বিষয়ক পদ;রূপানুরাগ এই পর্যায়গুলির শ্রেষ্ঠ কবি কারা? >যথাক্রমে,গোবিন্দদাস,গোবিন্দদাস, জ্ঞানদাস।
আরো পড়ুন : (বিষয়ের উপর ক্লিক করুন)
বৈষ্ণব পদাবলী কী? বৈষ্ণব পদাবলী বিভিন্ন পর্যায় ও বৈষ্ণব পদাবলীর তত্ত্ব গুলো আলোচনা করুন
বৈষ্ণব পদাবলির কবি বিদ্যাপতি সম্পর্কে লিখুন
বৈষ্ণব পদাবলির কবি চণ্ডীদাস সম্পর্কে লিখুন
বৈষ্ণব পদাবলির কবি গোবিন্দ দাস সম্পর্কে লিখুন
বৈষ্ণব পদাবলির কবি জ্ঞানদাস সম্পর্কে লিখুন