উপনিবেশের প্রভাব এবং উত্তর ঔপনিবেশী পরিস্থিতির মিশ্রিত অবস্থার কয়েকটি বৈশিষ্ট্য আমরা এভাবে তুলে ধরতে পারি:
১। স্থানীয় সংস্কৃতি সম্পূর্ণ বা আংশিক বিলুপ্তি। স্থানীয় সংস্কৃতির টিকে থাকা বৈশিষ্ট্যগুলোর অবমূল্যায়ন এগুলোকে নিকৃষ্টরূপে দেখার প্রবণতা।
২। আত্মপরিচয় সম্পর্কে উপনিবেশিতদের হীনমন্যতাবোধ।
৩। পশ্চিম পূর্ব প্রথম বিশ্ব দ্বিতীয় বিশ্ব, তৃতীয় বিশ্ব ইত্যাদি আধিপত্যশীল বিভাজনের ধারণা। স্থানীয়দের সাংস্কৃতিক, সামাজিক পরিচয় বা বৈশিষ্ট্য নির্দেশক সাধারণীকরণ ও ছাপ তৈরি। যেমন প্রাচ্যের মানুষ অলস, এশিয়রা নিয়তিবাদী, এশিয় সমাজ ব্যবস্থা স্বৈরতান্ত্রিক।
৪। উপনিবেশবাদী শাসকদের অনুকরণে উপনিবেশবাদীদের মধ্যে বুর্জোয়া শ্রেণীর উত্থান। উপনিবেশগুলো স্বাধীন হওয়ার পর এরা সাদা প্রভুদের অনুকরণে স্থানীয় প্রভুতে পরিণত হয়। এরা প্রভুর মর্যাদা পরিপূর্ণভাবে ভোগ করার জন্য উপনিবেশী প্রভুদের অনুকরণে পশ্চিমা সংস্কৃতির চর্চা করে তা আত্মস্থ করে এবং তা ঊর্ধ্বে তুলে রাখে।
৫। এবং উপরে বর্ণিত কারণসমূহের ফলে প্রাক্তন উপনিবেশ গুলোর প্রচুর সংঘাতমুখী অভ্যন্তরীণ পকেট ও অবিশ্বস্ত গ্রুপ সংবলিত সমস্যাগ্রস্ত সমাজের বিকাশ। উপনিবেশের দীর্ঘকালীন প্রভাব এবং উত্তর ঔপনিবেশিক পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়া স্বরূপ পশ্চিমা সকল কিছুকেই প্রত্যাখ্যান করার প্রবণতা এবং কোথাও কোথাও ধর্মীয় বা সংস্কৃতি সহ নানা ধরনের মৌলবাদী প্রবণতার বিস্তার যার মূলে হয়তো থাকে উপনিবেশী অতীতের অপরিশুদ্ধিতা থেকে নিজেদের সংস্কৃতিকে শুদ্ধ করার আকাঙ্ক্ষা।
আরো পড়ুন : (বিষয়ের উপর ক্লিক করুন)
উত্তর উপনিবেশবাদ কী বা উত্তর উপনিবেশবাদ কাকে বলে?
উত্তর উপনিবেশবাদের বৈশিষ্ট্যগুলো আলোচনা করুন
উত্তর উপনিবেশবাদের উদ্ভবের ইতিহাস ও ক্রমবিকাশ
উত্তর উপনিবেশবাদী লেখকদের পরিচয় দিন