পোস্ট মডার্নিজমের সংজ্ঞার্থ : পোস্ট মডার্নিজম হচ্ছে যা আধুনিক নয় এবং যা পৃথিবীতে আমাদের চতুর্দিকে ঘটে যাচ্ছে আমাদের বিশ্বকে বা মহাবিশ্বকে ধরে রাখছে বা বিনষ্ট করছে তাকেই রূপদান করার সামগ্রিক প্রচেষ্টা। পোস্ট মডার্নিজমের বাংলা উত্তর আধুনিকতাবাদ। এর সরল অর্থ আধুনিকতার উত্তর বা পরবর্তী আর মোটাদাগে পোস্টমডার্নিজমের স্বরূপ হচ্ছে আধুনিকাতার কিছু সিদ্ধান্ত ও কাজকর্ম আধিপত্ববাদ,কর্তত্ববাদ,ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ, ভোগবাদ ইত্যাদির বিরুদ্ধে বিরোধিতা করে মানুষের অভিজ্ঞতা ও স্বাতন্ত্র্যের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবাদী নতুন একটি আন্দোলন।
পোস্ট মডার্নিজম বিষয়ে এতই রকমফের আলোচনা করা হয়েছে যে এর সংজ্ঞা বেধে দেওয়া খুবই কঠিন। মডার্নিজম সম্পর্কে কয়েকজন মডার্নিস্টদের মতাত তুলে ধরা হল :
উইলিয়াম স্পানোস উত্তরাধুনিকতাবাদ বলতে বুঝেন, “কোনো ধারা পারম্পর্যের ঘটনা নয় মানবিক বুঝাপরার একটি স্থায়ী মুড”
পাউল দ্য মানের কাছে, “মডার্ন একটি উদ্ভাবনাময় অনুষঙ্গ”
জনবার্থের অভিমত, ” পোস্ট মডার্নিজম এমন এক আশু সংশ্লেষণের নাম যা আজও সম্পন্ন হয়ে ওঠেনি, যাকে আমরা পোস্ট মডার্নিজম বলে ধারণা করি তা আসলে অন্ত্য আধুনিকতা বা লেট মডার্নিজম “
১৯৫৯ ও ১৯৬০ সালে আরভিঙ হো ও হ্যারি লেভিন উত্তরাধুনিকতার কথা একটু আলাদাভাবে বললেন, তাদের মতে “পাস্টমডার্নিজম যেন এক পতন, মহান আধুনিকতার ঐতিহ্য থেকে নেমে আসার নাম পোস্ট মডার্নিজম”
ইহাব হাসানের মতে, “পোস্ট মডার্নিজম নৈঃশব্দের সাহিত্যের ধারাক্রমের একটা পরিণাম মাত্র”
পোস্টমডার্নিজম কোনো সর্বস্বীকৃত তত্ত্ব নয়। তবে যেখানে এসে বাস্তবতার দর্পণে ক্লাসিসিজম, রিয়ালিজম এবং রোমান্টিসিজম বাকহারা হয়ে পড়ে পোস্টমডার্নিজমের শুরু সেখান থেকে। পোস্টমডার্নিজম মানে- শিল্পসাহিত্যের প্রচলিত ধারণা থেকে দৃষ্টিকে সরিয়ে এমন এক সৃষ্টির সন্ধানে ধেয়ে চলা যেখানে মুক্ত চিন্তার শত রুদ্ধদ্বার খুলে যায়, দ্যুতি ছড়ায় ভাষার সাধারণত শব্দভাণ্ডার, পাঠকের সাথে শিল্পসাহিত্যের যোগাযোগ যায় বেড়ে।
আরো পড়ুন : (বিষয়ের উপর ক্লিক করুন)
পোস্ট মডার্নিজমের বৈশিষ্ট্যগুলো আলোচনা করুন
পোস্ট মডার্নিজমের উদ্ভবের ইতিহাস ও ক্রমবিকাশ